হ্যালো বন্ধুগণ,
আপনি যদি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা বা কোনো সরকারি চাকরীর পরীক্ষা যেমন SSC, MTS, CHSL, CGL, UPSC, BANK, POLICE, DEFENCE, RAILWAY ইত্যাদি-র জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাহলে আপনি একেবারে সঠিক ওয়েবসাইট-এ এসেছেন।
আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপনি পরীক্ষার উপযুক্ত স্টাডি ম্যাটারিয়েলস পাবেন যা আপনার পরীক্ষা Qualify করার জন্য খুব-ই উপযোগী প্রমাণিত হবে।
আপনি নিশ্চয় জেনে থাকবেন যে বর্তমানের পরীক্ষাগুলোতে পরিবেশবিদ্যা (Environmetal Studies) একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং এই বিষয় থেকে দু-চারটি প্রশ্ন আমাদের পরীক্ষাতে এসেই থাকে। তাই এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা পরিবেশবিদ্যার অন্তর্গত বিভিন্ন বায়ুমণ্ডলীয় স্তর সম্বন্ধে বিষদে জেনে নেব ফলে এই টপিক থেকে আসা প্রশ্নের উত্তর আমরা পরীক্ষাতে সহজেই নির্ভুলভাবে দিতে পারবব।
☼ বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস [Layers of the Atmosphere] : উচ্চতা, উষ্ণতা ও উপাদানের ভিত্তিতে পৃথিবীর চতুর্দিকের বায়ুমণ্ডলকে বিভিন্ন স্তরে ভাগ করা যায়, যেমন-
(১) ট্রোপোস্ফিয়ার, (২) স্ট্রাটোস্ফিয়ার, (৩) আয়নোস্ফিয়ার (৪) এক্সোস্ফিয়ার এবং (৫) ম্যাগনেটোস্ফিয়ার ।
(১) ট্রোপোস্ফিয়ার [Troposphere] বা ঘনমণ্ডল:
(i) ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৮ কিলোমিটার পর্যন্ত ঊর্ধ্বের বায়ুস্তরকে ট্রপোস্ফিয়ার বা ঘনমণ্ডল বলে । বায়ুমণ্ডলের এই স্তরে আমরা বাস করি ।
(ii) মেরু অঞ্চলে [Poles] ট্রপোস্ফিয়ার প্রায় ৯ কিলোমিটার ঊর্ধ্বে বিস্তৃত এবং নিরক্ষরেখার [Equator] ওপর ট্রপোস্ফিয়ারের উচ্চতা প্রায় ১৮ কিলোমিটার ।
(iii) বায়ুমণ্ডলের এই স্তরে বায়ুতে প্রায় ৯০% ধূলিকণা, জলীয় বাষ্প, কুয়াশা, মেঘ প্রভৃতি থাকায় এই স্তরে ঝড়, বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, বজ্রপাত, তুষারপাত প্রভৃতি ঘটনাগুলি ঘটতে দেখা যায়, এজন্য ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুমণ্ডলকে 'ক্ষুব্ধ মন্ডল' বলে ।
(iv) বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরের মধ্যে ট্রপোস্ফিয়ারই হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তর । বায়ুমণ্ডলের প্রায় ৭৫% গ্যাসীয় পদার্থ এই স্তরে থাকায় এখানে বায়ুরচাপ সবচেয়ে বেশি ।
(v) ট্রপোস্ফিয়ারের ওপরের স্তরে জলীয়বাষ্প বা মেঘ থাকে না বললেই চলে ।
(vi) বায়ুমণ্ডলের এই স্তরে ভূপৃষ্ঠ থেকে যতই উপরে ওঠা যায় ততই তাপ মাত্রা কমতে থাকে । প্রতি কিলোমিটারে ৬.৪° বা প্রায় প্রতি ১৬৫ মিটার উচ্চতার জন্য ১° সেন্টিগ্রেড করে তাপ কমে যায়, ‘একে উত্তাপ কমে যাওয়ার গড়’ (Average Laps rate of temperature) বলে । ভূ-পৃষ্ঠের ওপরে ১০-১৩ কিলোমিটার উচ্চতায় বায়ুর তাপ এই হারে কমতে থাকে । মধ্য অক্ষাংশে (Middle Latitude) ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্ব সীমানায় বায়ুমণ্ডলের উত্তাপ –৭৫° সেন্টিগ্রেড থেকে –৬০° সেন্টিগ্রেড হয় ।
(vii) এই অংশে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বায়ুর চাপ কমতে থাকে । এই স্তরে বায়ুর ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি প্রায় শতকরা ৯০ ভাগ ।
(viii) ট্রপো (Tropo) ইংরেজি শব্দটির অর্থ পরিবর্তন (Change) এবং দৈনন্দিন আবহাওয়ায় আমরা যেরকম বিভিন্ন পরিবর্তন অনুভব করি, এই বায়ুস্তরেও সে ধরনের পরিবর্তন দেখা যায় ।
(২) স্ট্রাটোস্ফিয়ার [Stratosphere] বা শান্তমণ্ডল:
(i) ট্রপোস্ফিয়ার-এর ওপরের ১৮ থেকে ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুস্তরকে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বা শান্তমণ্ডল বলে ।
(ii) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে ধূলিকণা, মেঘ প্রভৃতি না থাকায় এখানে ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রপাত প্রভৃতি প্রাকৃতিক ঘটনা ঘটে না ।
(iii) স্ত্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে বায়ুপ্রবাহ, মেঘ, ঝড়, বৃষ্টি ও বজ্রপাত দেখা যায় না বলে দ্রুতগতিসম্পন্ন জেটবিমানগুলো ঝড়-বৃষ্টি এড়িয়ে চলার জন্য স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের মধ্য দিয়ে চলাচল করে । জেটবিমানগুলি সাধারণত এই স্তরের মধ্যে দিয়ে চলার সময়ে আকাশে সাদা দাগ রেখে যায় ।
•ওজনস্তর:
(i) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বা শান্তমণ্ডলের মধ্যে উপরের দিকে ৫০ কিলোমিটার থেকে ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটারের যে বায়ুস্তরটি রয়েছে তাকে ওজোনমণ্ডল বা ওজোনোস্ফিয়ার বলা হয় ।
(ii) এই স্তরে ওজোন গ্যাসের (O3) একটি পর্দা আছে, যার ফলে সূর্য থেকে বিচ্ছুরিত অতিবেগুনি (Ultra Violet Ray) ভূপৃষ্ঠে আসতে পারে না ।
(iii) ওজোন গ্যাস সূর্যের তাপ ও অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে, ফলে এই স্তরের তাপমাত্রা খুব বেশি হয় ।
(iv) ওজোনোস্ফিয়ার স্তর জীবজগতের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে নেওয়ায় জীবজগৎ ধ্বংশের হাত থেকে রক্ষা পায় ।
(৩) আয়নোস্ফিয়ার [Ionosphere] বা থার্মোস্ফিয়ার:
(i) ভূপৃষ্ঠের ঊর্ধ্বে ৮০ কিমি থেকে ৬৪০ কিমি পর্যন্ত উচ্চতায় বিস্তৃত হালকা বায়ূস্তরকে আয়নোস্ফিয়ার বলা হয় ।
(ii) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ওপরে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮০ কিলোমিটার উচ্চতায় বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা –৯৩° সেলসিয়াস থেকে বাড়তে বাড়তে ৪৮০ কিলোমিটার উচ্চতায় প্রায় ১২৩২° সেলসিয়াসে পরিণত হয় ।
(iii) প্রখর সূর্য কিরণের জন্য হালকা বায়ু দিয়ে গঠিত এই স্তরে বায়ুমণ্ডলের মোট ভরের মাত্র ০.৫% আছে ।
(iv) এই স্তরের বায়ু আয়নিত অবস্থায় রয়েছে (এই বিরাট অঞ্চলটি বিদ্যুতযুক্ত অসংখ্য কণা অর্থাৎ, আয়ন ও ইলেকট্রনে পূর্ণ হয়ে আছে) । এই স্তরে তড়িৎযুক্ত কণা বা আয়নের উপস্থিতির জন্য এই স্তরকে আয়নোস্ফিয়ারও বলা হয় । অর্থাৎ বায়ুমণ্ডলের এই স্তরের দুটি নাম রয়েছে, যেমন- থার্মোস্ফিয়ার ও আয়নোস্ফিয়ার । তবে এই স্তরটি আয়োনোস্ফিয়ার নামেই বেশি পরিচিত । এখানে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, ওজোন প্রভৃতি গ্যাস আয়নিত অবস্থায় থাকে ।
(v) তড়িতাহত অণুর চৌম্বক বিক্ষেপের ফলে সুমেরু ও কুমেরু অঞ্চলে এক রকম উজ্জ্বল আলোক বিচ্ছুরণ দেখা যায়, একে মেরুজ্যোতি বা মেরুপ্রভা বলে । ভূপৃষ্ঠের বেতার তরঙ্গগুলি আয়নোস্ফিয়ার ভেদ করে আরও ওপরে যেতে পারে না বলে এই স্তর থেকে বেতার তরঙ্গ প্রতিফলিত হয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসে । তাই বিভিন্ন রেডিও স্টেশন থেকে প্রচারিত গান, বাজনা, নাটক, কবিতা, সংবাদ প্রভৃতি আমরা রেডিও মারফত বাড়িতে বসে শুনতে পাই।
(৪) এক্সোস্ফিয়ার [Exosphere]: ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬৪০ কিমি উপরের ঊর্ধ্বের বায়ূস্তরকে এক্সোস্ফিয়ার বলা হয় । এই স্তরের বায়ু এত হালকা যে এই এর অস্তিত্ব প্রায় বোঝাই যায় না ।
(৫)ম্যাগনেটোস্ফিয়ার [Magnetosphere]: এক্সোস্ফিয়ারের উপরে অবস্থিত বায়ুমণ্ডলের সর্বশেষ স্তরকে ম্যাগনেটোস্ফিয়ার বলে । এই স্তরের জন্য পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের আয়নিত কণার উপস্থিতি নিয়ন্ত্রিত হয় ।
☼ এয়ারোনমি [Aeronomy]: আবহবিদ্যায় ভূপৃষ্ঠের উপরে প্রায় ১০০ কি.মি. পর্যন্ত বায়ুমণ্ডলের স্তর সম্মন্ধে আলোচনা করা হয় । এর উপরে বায়ুমণ্ডলের যে স্তর রয়েছে, সে সম্মন্ধে যে শাস্ত্রে আলোচনা করা হয়, তার নাম এয়ারোনমি ।
• ট্রোপোপজ [Tropopause]: ট্রোপোস্ফিয়ার এবং স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার- এই দুই বায়ুস্তরের সীমা নির্দেশক সংযোগ স্থলকে ট্রপোপজ বলে । ট্রপোস্ফিয়ার বায়ুস্তর এই অঞ্চলে এসে থেমে যায়, তাই একে ট্রপোপজ বলে । ট্রপোপজ অঞ্চলে নিরক্ষরেখার ওপর বায়ুর তাপমাত্রা -৮০° সেন্টিগ্রেড এবং মেরুদ্বয়ের ওপর -৪৫° সেন্টিগ্রেড হয়ে থাকে, কারণ মেরুদ্বয়ের ওপর যেখানে ট্রপোপজের উচ্চতা মাত্রা ৮ কিমি, সেখানে নিরক্ষরেখার ওপর ট্রোপোপজের উচ্চতা ১৮ কিমি । ট্রপোপজের স্তরে বায়ু চলাচল বা তাপীয় ফল তেমন দেখা যায় না, তাই এই স্তরকে স্তব্ধ স্তরও বলে ।
• স্ট্র্যাটোপজ [(Stratopause]: স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের মধ্যে দিয়ে যতই উঁচুতে ওঠা যায় ততই উত্তাপ ক্রমশ বাড়তে থাকে এবং (উত্তাপ) ৫০ কিমি উচ্চতায় সর্বোচ্চ (০° সেন্টিগ্রেড) হয় । তবে ৫০ কিমির বেশি উচ্চতা থেকে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা আবার কমতে শুরু করে, অর্থাৎ তাপমাত্রার বৃদ্ধি থেমে যায় বা পজ করে । স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার ও মেসোস্ফিয়ারের মধ্যবর্তী অঞ্চলে তাপমাত্রার স্থিতাবস্থা থাকায় এই অঞ্চলকে স্ট্র্যাটোপজ বলা হয় ।
• মেসোস্ফিয়ার: স্ট্র্যাটোপজের ওপর থেকে বায়ুমণ্ডলের যতদূর উচ্চতা পর্যন্ত উষ্ণতা কমতে থাকে, সেই অংশটিকে মেসোস্ফিয়ার বলে । মেসোস্ফিয়ার স্তরটি স্ট্র্যাটোপজ স্তরের ওপর ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৮০ কিমি উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে । ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮০ কিমি উচ্চতায় এই স্তরে বায়ুর তাপমাত্রা সবচেয়ে কম থাকে (কম বেশি -৯৩° সেলসিয়াস) । মহাকাশ থেকে যেসব উল্কা পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে সেগুলি মেসোস্ফিয়ার স্তরের মধ্যে এসে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ।
• মেসোপজ (Mesopause): মেসোস্ফিয়ারের ওপরে যে উচ্চতায় তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়া থেমে যায়, অর্থাৎ পজ করে, তাকে মেসোপজ বলে ।
পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনাদের বন্ধুদের সাথে SHARE করে তাদেরকেও জানার সুযোগ করে দিন। এতে আপনার বন্ধুরাও খুব-ই উপকৃত হবেন। আর আপনাদের যদি কোনো রকম জিজ্ঞাসা থাকে তাহলে তা নিচে দেওয়া Comment Box-এ Comment করে জানান। আমরা আপনাদের Comment-এর উত্তর দেওয়ার জন্য সর্বদা তৎপর আছি । আরোও নতুন নতুন UPDATED POST পেতে আমাদের Website-এ নিয়মিত VISIT করুন
ধন্যবাদ!!!
Note: আপনাদের মতো আরও হাজার হাজার প্রতিযোগী আমাদে Facebook Page-এর সাথে যুক্ত হয়েছেন এবং এখান থেকে UPDATED STUDY MATERIALS, CURRENT AFFAIRS, PDF এবং বিভিন্ন পরীক্ষামূলক তথ্যাদি সংগ্রহ করে নিজেদের এক সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার উদ্দেশ্যে এগিয়ে চলেছেন।
তাহলে আপনি দেরি করছেন কেন? এক্ষুনি আমাদের Facebook Page-টি LIKE করুন এবং আমাদের পরিবারের সদস্য হয়ে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সমস্তরকম Study Materials সংগ্রহ করুন।
No comments:
Post a Comment